সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নিখোঁজ শিশু’কে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিলেন ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশ দৈনিক আমার দেশ’কে ভোলার রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্টজনদের অভিনন্দন সা’দপন্থীদের বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবিতে ভোলায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা ভোলায় বাবা-ছেলে আগ্নেয়াস্ত্র সহ কোস্টগার্ডের হাতে আটক ভোলায় ইটভাটা মালিক সমিতির ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন আজ ১০ই ডিসেম্বর’ ভোলা পাক’হানাদার মুক্ত দিবস আজ ১০ ডিসেম্বর, ভোলা পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস ভোলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গনঅধিকার পরিষদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি ভোলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার ভোলার ভেলুমিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন জেলা পুলিশ সুপার

ভোলায় টোকাই জামালের বিরুদ্ধে মামলা, দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি এলাকাবাসীর

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২৬৬ বার পঠিত

ষ্টাফ রিপোর্টার ॥

ভোলা পৌরসভার উকিল পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ জামাল ওরফে টোকাই জামালের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে মামলা। দ্রুত তাকে গ্রেফতারের দাবি করছেন ভুক্তভোগী সহ স্থানীয়রা।

তৎকালীন স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে ক্ষমতার দাপটে ভোলা পৌর ৭নং ওয়ার্ডের উকিলপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বিভিন্ন মানুষকে জিম্মি করে জমি দখল ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে চাঁদাবাজি করে আসছে টোকাই জামাল ও তার বাহিনী। তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে কেউ কেউ প্রতিবাদ করলেও তাদেরকে হতে হয়েছে নানাভাবে হেনস্থার শিকার।

বছরের পর বছর জামাল বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসীকে বাধ্য হয়েই মুখ বুজে সহ্য করে থাকতে হতো। অনেকেই তার অত্যাচারের বিবরণ দিতে গিয়ে কান্নার ভেঙে পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা কালিমুল্লাহ ও এনামুল করিম জানান, জামাল ওরফে (টোকাই জামাল) এর দখল বানিজ্য ও চাঁদাবাজীতে আমরা এলাকাবাসী বিগত ১৭ বছর যাবত দূর্বিসহ জীবন যাপন করছি। জামালের দখলবাজি ও চাদাবাজিতে শুধু আমরা নই, আমাদের প্রতিবেশীরা সহ অত্র ঊকিলপাড়া এলাকার সাধারন মানুষরা অসহায় জীবন যাপন করছে। আওয়ামীলীগ সরকারের ১৭ বছর যাবতই ভোলা পৌরসভার মেয়র সহ ভোলা জেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতার নাম ব্যবহার ভাঙ্গিয়ে রাজনীতি করে এলাকার অনেক নিরীহ মানুষকে বিপদে ফেলে তাদের জমি দখল করা সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরকে হুমকি ধামকি দিয়ে চাঁদা আদায় করতো।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর উকিল পাড়ার ব্যবসায়ীরা এই চাঁদাবাজ টোকাই জামালের বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, জামাল ওরফে টোকাই জামাল সম্পর্কে জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, নারী ব্যবসা সহ নিরীহ মানুষকে অভিনব কায়দায় টাকা হাতে নেওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাক্তি জানান, টোকাই জামাল তার হালাল জমিতে দাড়িয়ে তাকে হুমকি দিয়ে চাদা ও জমি দখল করছে। জামাল কিভাবে হুমকি দিয়েছেন তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘জমিতে পা দিলে কেউই বেঁচে ফিরতে পারবে না, কোপাইয়া লাশ গুম করে দিমু”। এভাবেই জামাল বাহিনীর হুমকিতে শত অপরাধ দেখেও তা মুখ বুজে সহ্য করতে হয়েছিল তাদেরকে।

একই কথা বলে অপর বাসিন্দা এনামুল করিম বলেন, দূীর্ঘ ১৭ বছর যাবত টোকাই জামাল আমাদের বংশীয় বৈধ জমিকে বেদখল করার পায়তারা করে আসছে। আমার জমির ওয়ারিশদেরকে বিভিন্ন ছলনায় ও লোভ দেখিয়ে ভুল পথে প্ররোচিত করছে। এবং নিজে বড় রকমের ফায়দা নিতে আমার পরিবারের মধ্যে বিশাল দ্বন্দ ও সংঘর্ষ তৈরি করেছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, গত ২২শে আগস্ট ২০২৪ইং তারিখে টোকাই জামাল নিজে আমার চাচা উকিলপাড়া জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আবুল কালামকে বেধড়ক মারধর করে এবং পরে তার গ্যাংয়ের বখাটে যুবকদের মাধ্যমে অমানবিকভাবে মেরে আহত করেন। এ ঘটনায় আমরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করি, যার জিডি নং-৮২১।

কিন্তু থানায় জিডি করায় গত ৩১ শে আগসট আমি আমার পরিবারসহ বের হলে টোকাই জামাল ও তার বাহিনী উকিলপাড়া অনুকা স্টিলের সামনে আমাদেরকে চিৎকার করে গালিগালাজ করে। একই সাথে আমার পরিবারের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। তাতে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা আহত হই। ওই সময় আমাকে টোকাই জামাল ও তার গ্যাংয়ের হাত থেকে বাচাতে আসা স্থানীয়দের মধ্যেও কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনার পর পরই ওই রাতেই আমরা থানায় গিয়ে টোকাই জামাল ও তার গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ২য় বারের মতো অভিযোগ দায়ের করি। যার মামলা নং – ০৭।

এছাড়া স্থানীয় একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা জানেন, ভোলা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের উকিল পাড়ার বাসিন্দা মৃত আফরোজা খাতুনের ৬০ বছরের ভোগদখলীয় প্রায় ১১ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন যাবত ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে জামাল ওরফে (টোকাই জামাল) ও তার বাহিনী কামরুল, মেজবাহ, শামীম, রুবেল গংরা। বিষয়টি সমাধানে স্থানীয়রা একাধিকবার শালিস বিচার করলেও ওই সন্ত্রাসী জামাল ও ইনুর ক্ষমতার দাপটে কোন ভাবেই কেউ এর সমাধান করতে পারেনি। উল্টো জমির প্রকৃত মালিক মৃত আফরোজা খাতুনের ওয়ারিশদেরকে হুমকি, হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হেনস্তার শিকার করছেন তাদের।

অবশেষে বিষয়টি নিয়ে ভোলা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলেও জামাল গংরা জেলা প্রশাসনকেও দেখিয়েছেন বৃদ্ধাঙ্গুলী।

যদিও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে জামাল সহ তার গংদের সাথে যোগাযোগের একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনভাবেই তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপরে ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।’

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

You cannot copy content of this page