হারুন-অর-রশিদ ॥
ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফুজ্জামান যোগদানের এক বছরে অফিস পরিচালনায় কাজের অগ্রগতি, আন্তরিকতা ও বিভিন্ন সামাজিক কাজে ইতোমধ্যেই নিজেকে জনবান্ধব জেলা প্রশাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সদা হস্যোজ্জল, সদালাপি মানুষটি খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নেয়ার এক অবিসাশ্য মন্ত্র আয়ত্ম করেছেন। জনসাধারনের প্রতি অকৃত্তিম ভালোবাসা ও অফিসের সকল কর্মকর্তদেরও হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তিনি। ভাব কিংবা অহংকারের কোনো অশুভ প্রেতাত্মা তার উপর ভর করতে পারেনি। তাইতো সবার কাছে তিনি অত্যান্ত প্রিয় একজন জেলা প্রশাসক হয়ে উঠেছেন। কাজকে যেমনি সম্মান করেন, তেমনি কাজ করতে ভালোবাসেন জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফুজাজামান।
সম্প্রতি তার বাংলোয় দৈনিক ভোলার বাণীর পত্রিকার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক হিসেবে ১ বছর পার করার শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে উঠে আসে কথাগুলো।
জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, আমি যে খুব পরিনত বয়সের একজন মানুষ তা নয়। মানুষ মাত্রই ভুল-ত্রুটি হবে একটাই স্বাভাভিক। একজন জেলা প্রশাসক হিসেবে জেলায় শত শত সমস্যা হাজির হয়, সেখানে সব ডিশিসন পারফেক্ট হবে এমন নয়। জনস্বার্থে অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হয়। আর সে ক্ষেত্রে সমালোচক থাকতেই পারে। আমি মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করি। আমি সমাজতত্বের মানুষ, আমি রিসার্স এর মানুষ, আমার কাছে মনে হয় একজন মানুষের ভিতরকার জায়গাটা যদি আমি চিনতে চাই তাহলে তার সাথে আমার মিশতে হবে। আমি সকল মানুষকেই সমান ভাবে দেখি। তার যোগদানের ১ বছরের কিছু কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরেন তিনি জানান, গত এক বছরে ভোলার বিচ্ছিন্ন চরে বসতি রয়েছে এমন ৬টি চরে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা সত্বেও বাঙ্গালি জাতির ঐতিহ্য সাথে যুক্ত যে বিষয়টি সেই শহীদ মিনার ছিল না। আমি মনে করেছি স্কুলগুলোর সাথে শহীদ মিনারগুলো যুক্ত হলে বাৎসরিক আয়োজন হবে, ঔ এরিয়ার সেন্ট্রাল পয়েন্ট হবে, শহীদ মিনার কি জানলে চরের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে পারবে। তাই নিজের উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিয়েছি। জেলা প্রশাসকের বাংলোটি নান্দনিক ভাবে সাজিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমি নিজেই কালচারাল প্রোগ্রাম করার ছেলে। স্টেজে অনেক প্রোগ্রাম করেছি। ভোলায় একটা অডিটিয়াম করার প্রচেস্টা চলছে। ডিসি অফিসে একটা লাইব্রেরী ছিলনা, বর্তমানে তার কাজ চলছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়কে সব কিছুর আধুনিকতার ছোয়া আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগতদের জন্য বসার ব্যবস্থ্যা, পানির ব্যবস্থ্যা করেছি। সার্কিট হাউজকে সংস্কার করা হয়েছে। তিনি এসেই জন প্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে বরাদ্দ এনে এসব উন্নয়নমূলক করেছেন। মহিলা ক্লাবের উন্নয়ন, অফিসার্স ক্লাবে একটি জিম করেছি শীঘ্রই উদ্বোধন হবে। তিনি আরো বলেন, ভোলার ৭ উপজেলায় শিল্পকলায়, মহিলা কলেজেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জন্য অর্থায়ন করা হয়েছে। তিনি প্রতিদিন অসহায়, গরীব-দুঃখী মানুষদের সামর্থ অনুযায়ী সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ, মক্তব, মাদ্রাসায় ও মন্দিরে সহযোগিতা দেয়া অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ভোলায় অনেক শিল্পি, সাহিত্যিক, চিন্তাশীল, গ্রগতিশীল মানুষ রয়েছে, কিন্তু ভালো অডিটোরিয়াম থাকলে সম্মিলিতভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনটি আরো এগিয়ে যেত। ডিসি অফিসের পিছনে থেকে পুকুরের পার হয়ে ঘাটলা পর্যন্ত একটা ওয়াক ওয়ে নির্মাণ করা হবে, যাতে বিকেলে মানুষ হাটার একটা সুয়োগ পায় সাথেও বসার স্থান থাকবে। পরবর্তিতে পুকুরটাকে সংস্কার করে মাঝখানে ভাসমান রেস্টুরেন্ট করা হবে। মানুষ এখানে এসে একটু বিনোদনের মাধ্যমে অবসর সময় কাটাবে পরিবেশটাও ভালো থাকবে। তিনি জানান, কাজের মন মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে গেলে সকল কাজই করা সম্বব। তার জন্য একটা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন মন থাকতে হয়।
সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে যে একটি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা সত্ত্বেও ভোলা জেলা সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে নিজেকে একজন দক্ষ জেলা প্রশাসক হিসেবে প্রমাণ করেছেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তামিম আল ইয়ামীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আলমগীর হুসাইন, এনডিসি সামসুজ্জামান, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাজবিউল ইসলাম ইসকেম, জেলা নাজির গৌতম সিংহ, ভোলার বাণীর সম্পাদক মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, কালবেলা প্রতিনিধি ওমর ফারুক, চ্যানেল আই প্রতিনিধি হারুন অর রশীদ, ভোরের কাগজ প্রতিনিধি এইচ এম নাহিদ, বিবা’র মনিরুল ইসলাম, রাজধানী টিভি প্রতিনিধি জে আই সবুজ, আজকের দর্পণ প্রতিনিধি আশরাফুল আলম সজিব, ভোলার বাণীর সহ-সম্পাদক ইমরান হোসাইন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মাহে আলম, স্টাফ রিপোর্টার মেসকাত সহ প্রমূখ।
You cannot copy content of this page