ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফুজ্জামান বলেছেন, ভোলায় প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ রয়েছে যারা সব সময় বিভিন্ন দুর্যোগের সম্মুখিন হয়। তাদের বাদ রেখে জেলার সামগ্রিক উন্নয়ন সম্বব নয়। এরা অধিকাংশই জেলে মাছ শিকার করেই জিবিকা নির্বাহ করে আসছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি সকল জিও এনজিওদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
বুধবার (৮ই মে) গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার হলরুমে আয়োজিত (আরএইচএল) প্রকল্পের অবহিত করন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এখনই সময় জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসা। পরিবেশ রক্ষায় সবাই একজোট হয়ে কাজ করলে আমরা সুন্দর ভাবে বাচতে পারবো এবং এ সবুজে ঘেড়া ঘেরা দেশটাকে বাচিয়ে রাখা যাবে। পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের গ্রীণ ক্লাইমেন্ট ফান্ডের অর্থায়নে রেজিলিয়েন্ট হোমস্টেট এন্ড লাইভলিহুড সাপোর্ট টুদ্যা ভারনালেবল কোস্টাল পিপল অব বাংলাদেশ শীর্ষক প্রকল্পটির অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস) ও পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) ভোলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
অনুষ্ঠানে পরিবার উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোঃ কামাল হোসেন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় বণ কর্মকর্তা ড. মোঃ জহিরুল হক, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাসান ওয়ারিসুল কবীর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল, গ্রামীণ জন উন্নযন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন ও জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় উপকূলীয় অতিদরীদ্র জনগোষ্ঠির জীবন মান উন্নয়ন ও জলবায়ু সহিষ্ণু বসতভিটা নির্মাণ। প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি হ্রাস করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় তাঁদের উন্নত ও টেকসই বিকল্প জীবিকার উপায় প্রদান করা। প্রকল্পটির মাধ্যমে সাতটি উপকূলীয় জেলার (কক্সবাজার , ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনা) প্রায় ৩ লক্ষ অতিদরিদ্র মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন। প্রকল্পটির উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে: উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল বাড়ি নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ/বসতভিটা উচুকরণ, কাঁকড়া হ্যাচারি স্থাপন ও কাঁকড়া চাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, মাঁচা পদ্ধতিতে ছাগল/ভেড়া পালন, বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় লবণাক্ততা সহনশীল সবজি চাষ, বাড়ীর আঙ্গিনায় এবং কাঁকড়া ঘেরে ম্যানগ্রোভ বনায়ন ইত্যাদি। পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্পটি বাংলাদেশের সাতটি উপকূলীয় জেলার জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে লক্ষিত জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকার মানের ক্রমোন্নয়ন উন্নয়ন ঘটবে। প্রকল্পটি ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন ও মনপুরা এলাকায় কাজ করবে। প্রকল্পের কর্মকান্ড নিয়ে মাল্টিমিডিয়ায় উপস্থাপন করেন পিকেএসএফ এর (আরএইচএল) প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শেখ নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক কর্মসুচি এন্ড লিগ্যাল অ্যাডভোকেট বীথি ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয় ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদার, বোরহাউনউদ্দিন টবগি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জসিম হাওলাদার, চ্যানেল ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক আদিল হোসেন তপু, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার প্রিন্সিপ্যাল অফিসার তানজিলা সুমি সহ অন্যন্যরা।
You cannot copy content of this page