পানির গ্লাস পরিষ্কার করে দিতে দেরি হওয়ায় ৩ সন্তানের এক জননীকে নির্যাতন করে মুখে কীটনাশক ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামীসহ তাঁর পুরো পরিবার ঘরে তালা মেরে উধাও হয়ে গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশিভূষণ থানা এলাকার জাহানপুর ইউনিয়নের ওমরাবাজ গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। শশিভূষণ থানার ওসি এনামুল হক এই ঘটনার সত্যতার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আসমা খানম (২৭) পাশর্বতী এলাকার এওয়াজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের আব্দুল রশীদ ঢ়াড়ীর মেয়ে। তিনি ৩ সন্তানের জননী ছিলেন। অভিযুক্ত স্বামী আজাদ মাঝি ওমরাবাজ গ্রামের সিদ্দিক মাঝির ছেলে। নিহত আসমা খানমের মা জাহানারা বেগম জানান, আজাদ মাঝির সঙ্গে তাঁর মেয়ের ১২ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। তাদের ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে কারণে-অকারণে আজাদ তাঁর মেয়েকে নির্যাতন করতো। স্থানীয় পর্যায়ে এসব বিষয় নিয়ে একাধিকবার সালিশি বৈঠকও হয়েছে। এরপরও তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ছিল।
মঙ্গলবার বিকেলে আসমা তাঁর মাকে ফোন করে জানায়, পানির গ্লাস পরিষ্কার করে পানি দিতে দেরি হওয়ায় আজাদ তাকে ব্যাপক নির্যাতন করেছে। এসময় আসমা উচ্চস্বরে ফোনে মায়ের সঙ্গে কান্নাকাটিও করেছে। রাত ৮টার দিকে আজাদ তাঁর শাশুড়ী জাহানারা বেগমকে ফোন করে জানায়, আসমা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ কথা শুনে জাহানারা বেগম ও তাঁর ছেলে জসিম উদ্দিন চরফ্যাশন হাসপাতালে গিয়ে দেখেন হাসপাতালের বেডে আসমার মৃতদেহ পড়ে আছে। মৃতদেহের পাশে তাঁর ৪ বছর বয়সী নাতনি ছাড়া আর কেউই নেই। আসমা মারা যাওয়ার খবরে হাসপাতাল থেকে সামী আজাদ ও বাড়ি থেকে তাঁর পরিবার ঘরে তালা মেরে পালিয়ে যায়।
নিহত আসমার ভাই জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানায়, আজাদকে গ্লাস পরিষ্কার করে পানি দিতে দেরি হওয়ায় আজাদ তাঁর বোনকে নির্যাতন করে মুখে কীটনাশক ঢেলে হত্যা করে হাসপাতালে মরদেহ রেখে পালিয়ে গেছে। তিনি এ ঘটনার সঠিক বিচারের দাবি জানান।
শশিভূষণ থানার ওসি এনামুল হক জানান, আসমার মরদেহ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর পরে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ঘটনার মূল সত্যতা জানা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে নিহত আসমার সামী অভিযুক্ত আজাদকে অতি শীগ্রই আইনের আওতায় এনে এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
You cannot copy content of this page