ভোলা জার্নাল রিপোর্ট ||
ভোলায় তীব্র শীতের হাত থেকে ভোলা জেলার নিন্ম আয়ের অসহায় মানুষদের পাশে থাকতে রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেছেন ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফুজ্জামান।
শনিবার (১৩ই জানুয়ারি) রাতে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের কোরারহাট বেড়িঁবাধ, শিবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ও ভোলা শহর ঘুরে প্রায় দুই শতাধিক ছিন্নমূল, বয়স্ক ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষকে কম্বল দিয়েছেন ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃআরিফুজ্জামান। জেলা প্রশাসকের হাত থেকে কম্বল পেয়ে মানুষগুলো খুশি হয়ে আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, এভাবে কেউ আমাদের ডেকে কোনদিন শীতবস্ত্র দেয়নি। সবাই শুদু আমাদের নাম লিখে নিয়ে যায় কিন্তু কম্বলের দেখা পাই নাই।
ডিসির কম্বল পাওয়া ধনিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কোরারহাট এলাকার রিকসা চালক সালাউদ্দিন বলেন, আমি রিকশা চালক। রাত হলে ছেলে মেয়ে নিয়ে শীতে খুব কষ্ট থাকি। রোজগার করে যে টাকা পাই এতে একটা ভালো কম্বল কিনার সামর্থ্য নেই। অনেকের কাছে একটা কম্বল চাইচিলাম কেউ দেয়নি। আজ ডিসি স্যার আমার বাড়ীতে এসে নিজে শীতবস্ত্র দিয়েছেন। এটা আমার জীবনের সব থেকে বড় পাওয়া। মনে হয় আল্লাহ আমাদের চাওয়া কবুল করছে।
ষাট (৬০) বছর বয়সী বৃদ্ধা সালেহা বেগম বলেন, শীতে রাতে ঘুমাতে অনেক কষ্ট হতো। অনেক সময় শীতের কারণে ঘুম ভেঙে যেত কিন্তু আজকে স্যার আমাকে একটা শীতবস্ত্র হিসাবে কম্বল দিয়েছেন। আজ আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারবো। শীতে কম্বল পাওয়া মরিয়ম বলেন, আমার স্বামী একজন জেলে। নদীতে কোন মাছ না থাকায় আয় রোজগার তেমন হয়না। পোলাপাইনরে দুইটা শীতের পোশাকও কিনে দিতে পারতেছেনা। এই শীতের মধ্যে রাতে অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়ে নিয়া ঘুমাই। জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে একটা কম্বল দিয়েছে। এখন ভালো করে ঘুমাতে পারবো।
এ প্রসঙ্গে ভোলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, রাতের অন্ধকারে ছিন্নমূল মানুষের দেখা পাওয়া যায় বেশি। তাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কম্বল নিয়ে প্রকৃত দুঃস্থ শীতার্তদের মাঝে বিতরণের জন্য রাতের অন্ধকারকে বেছে নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন থেকেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। রাতভর বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। এছাড়া ভোর থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। উপজেলা কর্মকর্তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে রাতেই কম্বল নিয়ে রওনা হয়েছি। কম্বল পেয়ে ছিন্নমূল মানুষেরা খুশি হয়েছেন।
ডিসি আরও বলেন, আমরা এবছর দুযোর্গ ব্যবস্থপনা মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রান ভান্ডার থেকে ৪৩ হাজার ৫শ কম্বল পেয়েছি। সেগুলো আমরা উপজেলা ও ইউনিয়ন ভিত্তিক বিভাজন করেছি। ইতিমধ্যে স্ব-স্ব উপজেলায় দুস্থ ও শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরন করা হয়েছে। এছারাও পর্যায়ক্রমে জেলার ছিন্নমূল মানুষদের পাশে দাঁড়ানো হবে। এই শীতে যেন কেউ কষ্ট না পায় সেদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারী রয়েছে।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রিপন কুমার সাহা, ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল চন্দ্র শীল, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃইউনুস, সিনিয়র সহকারী কমিশনার নেজারত শাখা মো: আবু সাঈদ, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউল হক সহ ভোলা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
You cannot copy content of this page