আশিকুর রহমান শান্ত||
ভোলায় সেজো ভাইয়ের ক্রয় কৃত বসত ঘর কৌশলে জোরপূর্বক দখল করার পায়তারা করছে আপন বড় ও ছোট ভাই মিলে। সেজো ভাই তার ঘরে বসবাস করতে গিয়ে বড় ভাই ও ছোট ভাইদের প্রতিনিয়ত হামলা ও হুমকির স্বীকার হয়ে এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম আতংকে জীবন যাপন করছেন সেজো ভাই জাহাঙ্গীর।
ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের দরিরাম শংকর গ্রামের আহসানউল্লাহ পাটোয়ারী বাড়ির মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী জানান, তার মা মৃত আলফুতুনেচ্ছার কাছ থেকে তার ভাই শাজাহান ঘরটি ক্রয় করে। শাহজাহানের জরুরী টাকার প্রয়োজন হলে সে পরে তার আপন সেজো ভাই জাহাঙ্গীর এর কাছে নগদ ৪০ হাজার টাকায় ঘরটি বিক্রি করে দেন। কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছর তার ক্রয় কৃত ঘর তাকে বুঝিয়ে না দিয়ে জোর পূর্বক দখল করে নেওয়ার পায়তারা করছেন দুই ভাই আলমগীর ও সামসুদ্দিন মিলে। পাশাপাশি ঘরে থাকা নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল সহ গরু ছাগল লুট করে নিয়ে যায়। এবং ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীরকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে সেই দুই ভাই এর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত আব্দুল খালেকের ৫ সন্তানের মধ্যে পৈত্রিক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে, তবে উক্ত ঘরটি ক্রয় সূত্রে প্রকৃত মালিক জাহাঙ্গীর হলেও জায়গা জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার ক্রয় কৃতঘরটি তাকে বুঝিয়ে না দিয়ে তা দখলে নেওয়ার পায়তারা করছেন আলমগীর ও সামসুদ্দিন।
গত মঙ্গলবার রাত ৯ টায় অভিযুক্ত সোহাগ একটি দেশীয় অস্ত্র (রামদা) নিয়ে জাহাঙ্গীর ও তার ভাতিজা মিলনকে কুপিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে সেখানে যায়। শাপলা বাজারে প্রায় শতাধিক মানুষের সামনে সোহাগ মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ দিতে থাকে তার সেই রামদার কোপ স্থানীয় বাসিন্দা হানিফ মিকার ঠেকাতে গিয়ে সে আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে সেখানে আটকে রেখে জরুরী সেবা ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ কে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্ত সোহাগ সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার (১৫ই নভেম্বর) রাত ৯টায় আবারো আলমগীর ও শামসুদ্দিন এর নেতৃত্বে সুমন, সোহেল, তানিয়া ও সোহাগ সহ ৭ থেকে ৮ জন মিলে জাহাঙ্গীরের বসত গড়ে হামলা করে তার ঘর ভাংচুর করে। এবং তার ঘরে থাকা প্রতিবন্ধী মেয়ে মারজু বেগমকে সিলতাহানির চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসলে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
এ অবস্থায় জাহাঙ্গীর নিজের ক্রয়কৃত ঘরে স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে চরম আতংকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিরব ভুমিকায় ভাইদের মধ্যে বড় ধরনের দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আলমগীরের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি তার ছোট ভাই শামসুদ্দিনের সাথে কথা বলতে বলে, শামসুদ্দিনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রভাব শালী ব্যক্তিদের নাম ভাঙ্গিয়ে বলেন আপনারা তাদের সাথে কথা বলেন আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না। পরে বড় ভাই আলমগীর সাংবাদিকের তথ্য দিতে চাইলে সাংবাদিকদের সামনে শামসুদ্দিন তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর কে খালমন্দ সহ পাশে থাকা চেয়ার দিয়ে মারতে যায়।
এদিকে ওই এলাকার ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফায় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও এখনও কোনো সমাধান হয়নি।
এ ঘটনায় ভূক্তভোগী পরিবারটি বৃস্পতিবার ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন ফকির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
You cannot copy content of this page