নিজস্ব প্রতিবেদক ||
নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা সাধারণ মানুষ। ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনমজুর, মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষ দিশেহারা। দোকানগুলোতে বিভিন্ন সময়ে দোকনদারদের সাথে দাম দর নিয়ে ঝগড়াও করছে। এসব দোকান থেকে শুধুমাত্র চাল ও আটা কিনতে পারলেও মাছ, মাংস, শাকসবজিসহ সংসারের বাজার তালিকার অন্য সবকিছুই বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের পরিবার গুলোকে। এতে বাজার করতে এসে হিমশিমে পড়তে হচ্ছে। নতুন করে দাম বৃদ্ধি তালিকায় আবারো যোগ হয়েছে পেয়াজের দাম। এক রাতের ব্যাবধনে ভোলায় পিয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২৪০ টাকা বিক্রি করছে দোকানীরা। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করার পর দিনই দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ভোলা সদরের সব ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম বাড়ানোতে দিশেহারা হয়ে পড়া ক্রেতারা বাজার মনিটর জোরদার করা সহ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) ভোলার বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত দেশি পেয়াজ প্রতি কেজি ১০০- ১১০ টাকা কেজি দরে এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা জানার পরপরই বাজার থেকে পেঁয়াজ উদাও হয়ে গেছে। অনেক ব্যবসায়ী পিয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দেন আবার অনেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন।
আজ শনিবার দুপুর বাজারে দেশি পেঁয়াজ ছোট-বড় সাইজ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পাশাপাশি দোকানেও পেঁয়াজের ভিন্ন দাম হাঁকাচ্ছেন খুচরা ক্রেতারা। এক রাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হওয়াতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকেই মন্তব্য করছেন দেশটা মগেরমুলুক হয়ে পরেছে, অনেকে বলছে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পরছে দেশটা। আবার অনেকে বলছে সেন্টিকেটের মাধ্যমে সাধারন জনগনের পকেট কাটছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যাবসায়ী যার সাথে রাজনৈতিক প্রশয় থাকতে পারে। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের দিনে যা বিক্রি হয় তা আমরা আড়ৎদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে খুচরা বিক্রি করি। যেমন দামে কিনি তার চেয়ে কেজি প্রতি ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রী করি। আমাদের মজুদ করার মতো গুদাম নেই। গতকাল বিকেল থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হবে বলে বাজারে গুঞ্জন শোনা যায় । সকালে যখন পেঁয়াজ আনতে আড়তে যাই তখন আমাদের বেশি দামেই কিনে আনতে হয়েছে। তাই আমরা বেশি দামে কিনে বেশী দামে বিক্রি করছি। এখানে খুচরা ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই, আমরা যে টাকায় কিনি সামান্য লাভে তা বিক্রি করি।
এবিষয়ে মতামত জানতে ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়টি জানার সাথে সাথেই আমাদের একাধিক ভ্রাম্যমাণ মোবাইল টিম বাজার তদারকি করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। দাম বৃদ্ধির বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দগতি প্রসংগে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, উৎপাদনের উৎস থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত অনেক স্তর রয়েছে। উৎপাদনকারী ন্যায্য মূল পাচ্ছে না। অথচ ভোক্তাকে অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এর মধ্যে মধ্যসত্বভোগী একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এছাড়া বিপনন ব্যবস্থা দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্থ থাকায় সাধারণ মানুষ কষ্ট ভোগ করছে। পুরো বিপনন ব্যবস্থার মধ্যে যে অব্যবস্থা রয়েছে তা সরকারকে দূর করতে হবে।
You cannot copy content of this page