ভোলা জার্নাল রিপোর্ট।।
ভোলায় ভারতীয় অবৈধ ৪শ’ বস্তা চিনি সহ দুই জনকে আটক করেছে ভোলা জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি পুলিশ)। জানা গেছে, আটককৃতরা হলেন- মোঃ শাহীন (২৮) ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নে ৫নং ওয়ার্ডের শাহে আলমের পূত্র এবং ট্রাক চালক করিম (৩৫ ) লক্ষ্মীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার মান্দারি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের তরিকুলের ছেলে।
বুধবার (২৯ মে) গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোলা জেলা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি পুলিশ) এসআই মোঃ আসাদ ও এসআই মাসুদ এর নেতৃত্বে একটি টিম ইলিশা ইসলামিয়া মডেল কলেজের সামনে থেকে ৪০০ বস্তা চিনি সহ ব্যবসায়ী মোঃ শাহীন ও ট্রাক চালক করিমকে আটক করে ভোলা মডেল থানায় নিয়ে আসে। পরে ফ্রেশ কোম্পানির মোড়ক নকল করা ও অবৈধ পন্থা অবলম্বন করার অপরাধে শাহীন ও করিম’ সহ অজ্ঞাত আরো ৩ জন’সহ মোট ৫ জনকে আসামী করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের দন্ডবিধির ২৫/বি ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং ৭৮/২৪। এছাড়া ঢাকা মেট্রো ট-১৬-৩০৭২ নামীয় একটি কার্গো ট্রাকও জব্দ করা হয়। যার ইঞ্জিন নং-KAH658721, চেসিস নং-MBIA3KWADA RKD2011. পরবর্তীতে তাদেরকে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কোর্টে প্রেরণ করা হয়। এছারাও তাদের এই চোর কারবারির সাথে কারা কারা জড়িত তথ্যের জন্য আসামীদ্বয়কে পুলিশ হেফাজতে আনিয়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৃথকভাবে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
ভোলা জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) এর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এনায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ভোলা মহাজন পট্টি খাল পাড়ের মেসার্স জনতা ষ্টোর এর নেতৃত্বে কামাল ষ্টোর ও হাওলাদার ভান্ডার নামের দুই ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে ফ্রেশ কোম্পানির মোড়কে ভারতীয় অবৈধ শতশত টন চিনি ভোলায় আমদানি করে আসছে। এরা এসব চিনি সরাসরি তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে না রেখে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন অলিতে গলিতে ট্রাক রেখে ভ্যানে ও ছোট ট্রলিতে করে লোকচক্ষুর আড়ালে গুদামঘরে রাখতো। পরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যবসায়ীদের কাছে উচ্চ দরে এসব চিনি বিক্রি করে থাকেন। তাদের দ্বারা উৎসাহী হয়ে ইব্রাহিম, ইসমাইল সহ আরও কতিপয় ব্যাক্তিরা এ নকল চিনি আমদানির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে বলে জানাযায়। ইতিপূর্বে আরও ২/১ টি চালান ধরা পড়লেও সংঘবদ্ধ চোরা কারবারিরা অর্থ ও ক্ষমতার জোরে পার পেয়ে গেছে।
মেসার্স জনতা স্টোরের মালিক মোঃ ফারুক আহমেদ এর সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে দাম কমাতে পর্যাপ্ত চিনি বাজার জাত করার। তাই আমরা নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে ফ্রেশ কোম্পানির চিনি এনে বাজারজাত করি।
এ বিষয়ে ভোলার আরো কয়েক জন সাধারণ ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, জনতা স্টোরের মালিক ফারুকের নেতৃত্বে সরকারের ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ চিনির বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন যাবত এই সিন্ডিকেট টি অবৈধ চিনির ব্যবসা করে আসছে।
এই বিষয়ে ডিবির এসআই আসাদ জানান, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে আমদানী করা চিনিগুলো আসল চিনি নয়। সাদা কাঁচের গুড়ার সাথে কার্বহাইড্রেড ও সেকারীন মিশিয়ে দানা করা হয়। এ চিনি খেলে মানুষের কিডনি ডেমেজ হতে পারে। পরীক্ষার জন্য এ চিনি বিএসটিআইতে পাঠানো হবে। তিনি আরও জানান, ফ্রেশ কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ভোলায় আটককৃত এই ফ্রেশ নামের মোড়ক নকল করা হয়েছে এবং এই চিনিগুলো তাদের নয়।
You cannot copy content of this page