দৌলতখান প্রতিনিধি ||
তৃণমূল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যাঁরা নিবেদিত প্রাণ বলে পরিচিত, দলের দুর্দিনে যাঁরা ত্যাগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন, আন্দোলন-সংগ্রামের সময় রাজপথে থাকা ত্যাগী, নির্যাতিত ও কর্মীবান্ধব নেতারাই দলের প্রান সঞ্চার করে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গত কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে দলের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনটাই বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর আত্মত্যাগের জন্যই দলটির কেউ ক্ষতি করতে পারেনি। আওয়ামী লীগে অনেক ত্যাগী নেতা ছিলেন বলেই বারবার আঘাত করেও কেউ এ দলকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। দেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম, গণতন্ত্র ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য দলের সব ত্যাগী নেতার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তেমনই একজন আদর্শিক রাজনীতির বাতিঘর, একজন কর্মীবান্ধব নেতা, জনবান্ধব অভিভাবক ও পরিশীলিত জনসেবক হিসেবে ভোলার সর্বত্র সুপরিচিত আওয়ামীলীগ নেতা মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী।
দৌলতখানের দলীয় নেতা-কর্মীদের মতে, দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরীর মতো সৎ, কর্মীবান্ধব নেতা ও জনবান্ধব অভিভাবক কে দেখতে চায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন পর্যন্ত তার যে আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা রয়েছে তাতে যোগ্য নেতা মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী।
সরেজমিনে জরিপে জানাযায়, দলের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি থেকেছেন সামনের সারিতে। দিয়েছেন সফল নেতৃত্ব। দল ও জনগণের অধিকার রক্ষায় তিনি একজন নিবেদিত প্রাণ। জনবান্ধব এবং পরীক্ষিত লড়াকু সৈনিক। প্রচলিত রাজনৈতিক ধারায় থাকলেও লোভ লালসার স্রোতে গা ভাসাননি তিনি। তৃণমুল নেতাকর্মিদের সঙ্গে থেকে এখনও সাধারণ মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধ সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে নিরলস ভাবে কাজ করছেন তিনি।
দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামীলীগ নেতা মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী রাজনীতির বাইরে একজন বিশিষ্ট সমাজসেবক। মানুষের সেবা করাই জীবনের লক্ষ্য ও একমাত্র আশা। সারাজীবন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আর্দশ নিয়ে রাজনীতি করেছেন তিনি। সাধারণ মানুষের সেবক হয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সার্বিক উন্নয়নে সবসময় তরুন, যুবক ও সকল শ্রেণীর সাধারণ মানুষরা তাকে যেকোন সময় পাশে পায়।
মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার কলাকোপা গ্রামের ২নং ওয়ার্ডে এক সম্ভ্রান্ত্র পরিবারে ১৯৫৭ সালের ১৬ই জুন জন্মগ্রহণ করেন। মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী’র পিতা মরহুম খোরশেদ আলম চৌধুরী দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভোলার দৌলতখান অঞ্চলের কালুমুন্সী জমিদার বাড়ী’তে (মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরীর দাদা বাড়ি) মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্প ছিলো ও মরহুম খোরশেদ আলম চৌধুরী ছিলেন ওই ক্যাম্পের প্রধান এবং অন্যতম সংগঠক। তৎকালীন সময়ে দৌলতখান অঞ্চলে বাবুল চৌধুরী’র পিতা খোরশেদ আলম চৌধুরী’র নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। যার ফলে ওই পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী’র পিতা মরহুম খোরশেদ আলম চৌধুরী ১৯৫২ সাল থেকে দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নে বিভিন্ন মেয়াদে একাধিকবার পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে দীর্ঘ ৩৫ বছর চরখলিফা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাবুল চৌধুরী’র পিতা মরহুম খোরশেদ আলম চৌধুরী’র বড় বোনের ছেলে মরহুম নজরুল ইসলাম ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত পরপর তিন বার তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে দৌলতখান, তজুমদ্দিন ও মনপুরার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন।
মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী স্কুল জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৭৩ – ১৯৭৪ইং সাল পর্যন্ত ভোলা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৭৫ইং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভোলা জেলা শাখার সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে একাধারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সর্বদা আওয়ামী লীগের হয়ে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী। ২০০১ইং সালে যখন জামাত জোট সরকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নিপীড়ন করেন তখন, দৌলতখান আওয়ামী লীগের তৃনমুল নেতাকর্মীদের পাশে থেকে আশ্রয় প্রদান করেন তিনি। ওই সময়ের বিএনপি ক্যাডার কতৃক নির্যাতিত, বাড়ি ছাড়া অসংখ্য নেতাকর্মীদেরকে যার যা প্রয়োজন সাধ্যমতো তাদের সেবাদান করেন তিনি।
পরে ১৯৯৬ – ২০০৫ইং পর্যন্ত দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে যুগ্ন-সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং রাজনৈতিক সততায় ও কর্মীদের জনপ্রিয়তায় ২০০৫ইং সাল থেকে দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন তিনি। এবং ২০১৪ইং সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ বুকে ধারণ করে নিসঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক দক্ষতা, কর্মীদের জনপ্রিয়তা অর্জন ও সাহসী নেতৃত্বের অধিকারি হওয়ায়, ২০০৫ইং সালের পৌর মেয়র নির্বাচনে যখন বিএনপি জামাত জোট সরকারের বিরুদ্ধে কেউ ভোট করার সাহস পাইনি তখন ভোলা জেলার পাঁচটি পৌরসভার মধ্যে একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিএনপি সন্ত্রাসীদের বোমা হামলা ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে বিএনপি জামাত জোট সরকারের শাসন আমলে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হয়ে পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটের নির্বাচন করেন। দলের নানামূখি প্রতিকূল সময়ে বিভিন্ন মিছিল মিটিং ও আন্দোলন-সংগ্রামে সর্বদা সক্রিয় অবস্থানে থেকে নেতৃত্বদান এবং দলের জন্য সর্বদা নিবেদিত প্রান হিসেবে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে তার – ১৯৭৯ইং সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সক্রিয় সদস্য হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। দৌলতখান, তজুমদ্দিন ও মনপুরা নিয়ে গঠিত সংসদীয় ভোলা-২ আসনের নির্বাচনে বিভিন্ন মিটিং- সমাবেশ আয়োজন সহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। তৎকালীন ওই নির্বাচনে মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম জয়লাভ করেন। ১৯৯১ইং সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত এমপি প্রার্থী আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ এর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাবুল চৌধুরী এবং ওই নির্বাচনে তোফায়েল আহমেদ জয় লাভ করেন। এছাড়াও ১৯৯৬ইং, ২০০১ইং সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী মনোনীত এমপি প্রার্থী আলহাজ তোফায়েল আহমেদের প্রধান এজেন্ট ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে নেতৃত্বদান ও মুখ্য ভূমিকা পালন করেন আওয়ামীলীগের ত্যাগী এই নেতা।
২০০৫ইং সালে বিএনপি’র অত্যাচার-নিপীড়ন ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও তোফায়েল আহমেদের নির্দেশে দলীয় কার্যক্রম সক্রিয় রাখার জন্য ও শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দৌলতখান উপজেলার ০৯টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছিলেন আওয়ামী লীগের সংগ্রামী নেতা মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী। এরপর ২০০৮ইং, ২০১৩ইং ২০১৯ইং সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সক্রিয় রাজনৈতিক অবস্থান ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন ও নেতৃত্ব দিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের কে জয়যুক্ত করতে ভলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবেও মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন, দৌলতখান পৌরসভা নির্বাচনে ১৯৯৮ সালে দৌলতখান পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ২০০৫ইং সাল পর্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৯ইং সালে দৌলতখান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ইং সাল পর্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী। এছাড়াও জনপ্রতিনিধি থাকা অবস্থায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্থানীয় সরকারের পরিচালনায় স্টাডি ট্যুরে- চেক রিপাবলিক, পোল্যান্ড, ইংল্যান্ড, মালয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া ও জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশে সরকারী সফরে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ও সফলতা অর্জন করেন তিনি।
বর্তমানে দৌলতখান উপজেলা আওয়ামী লীগের ০১নং কার্যনির্বাহী সদস্য এবং ২০১৬ইং সাল থেকে – চলমান ২০২৪ইং পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভোলা জেলা শাখার সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন ও নেতৃত্ব প্রদান করছেন মামুনুর রশিদ বাবুল চৌধুরী।
You cannot copy content of this page