ইসমাইল হোসেন আরিফ ||
আধুনিক ভোলার রুপকার মরহুল নাজিউর রহমান মঞ্জুর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি’র ভোলা জেলা শাখার আয়োজনে এই মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে আছর নামায বাদ বাংলাদেশের একসময়ের প্রভাবশালী এই নেতার মাগফেরাত ও নাজাত কামনা করে উকিল পাড়া শান্ত নীড়ে মিলাদ ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জুর পত্নী শেখ রেবা রহমান, তার বড় ছেলে ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি’র চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, মেঝো ছেলে অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান শান্ত ও তার ছোট ছেলে ব্যারিষ্টার ওয়াশিকুর রহমান অঞ্জন সহ পরিবারবর্গের সদস্যরা। এছারাও ভোলার অন্যন্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সাধারন মানুষরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ভোলার কৃতি সন্তান মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জু। তিনি ১৯৪৮ সালে ৩০শে জুন ভোলার ঐতিহ্যবাহী বালিয়া মিয়া বাড়ীতে মিয়া পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। ২০০৮ সালের ৬ই এপ্রিল তিনি লিভারে সমস্যা জনিত কারনে মাত্র ৬০ বছর বয়সে ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। রাজনীতিতে সফল এই নেতা প্রাক্তন এলজিআইডি মন্ত্রী ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সফল মেয়র এবং আধুনিক ভোলার রুপকার মরহুম নাজিউর রহমান মঞ্জু। বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার শাখা ব্যবস্থার জনক বাংলাদেশের সাবেক এই প্রভাবশালী নেতা। তাঁর পিতা মরহুম বজলুর রহমান মিয়া। ৪ ভাই এর মধ্যে তিনি ২য়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এম.কম পাস করেছেন। প্রথম জীবনে মতিঝিলে তিনি এশিয়াটিক ট্রাভেলের সাথে জড়িত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। রাজনীতির ক্ষেত্রেও তিনি ছিলন সফল। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মাস সংসদের সাধারন সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সদস্য ও হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের ১৮ দফা বাস্তবায়ন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তৎকালীন সময়ে জাতীয় পার্টি (জাপা)’র মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চারদলীয় ঐক্য জোটের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিএনপির) শরীক দল ছিলেন।
তাছাড়াও ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ঢাকা সিটিকর্পোরেশনের পূর্বে নাম ছিল ঢাকা মিনিসিপাল কর্পোরেশন তা পরিবর্তন করে তার নাম দেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দেন। এরশাদের আমলে তিনি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় দফতরের মন্ত্রী। তিনি ভোলা জেলার সকলের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর জনহিতকর কর্মকান্ডে ছোঁয়া পায়নি এমন এলাকা খুবই বিরল। তাঁর ভক্তরা তাঁকে কখনো “হাতেম তাই” বলে সম্বোধন করতো। নিজের অর্থে নির্দিষ্ট সময়ে তিনি ব্যাপকভাবে জনসেবামূলক কাজ করেছেন যার জুড়ি মেলা ভার। তাঁর আশা আকাঙ্খা ছিল অনেক। তিনি বলেছিলেন, ‘সুযোগ পেলে আমি ভোলাকে সিঙ্গাঁপুর বানিয়ে ছাড়বো। তার কথার সাথে কাজের মিল রেখেই এগিয়েছেন তিনি। ভোলার উন্নয়নের স্বার্থে নিয়ে ছিলেন নানা রকম পরিকল্পনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়নও করেছেন অনেক কাজ। কিন্তু হঠাৎ লিবার জনিত সমস্যায় ২০০৮ইং সালের ৬ই এপ্রিল ‘হাতেম তাই” খ্যাত এই নেতা পৃথিবীকে চির বিদায় জানান। তার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা দেশ।
You cannot copy content of this page